বর্তমান দিনগুলোতে (অর্থাৎ ২০১৯ এর শেষ থেকে) যদি আপনি স্বাস্থ্য-দপ্তর অথবা সরকারের অন্যান্য কোন জরুরী সেবায় নিয়োজিত না থাকেন; তবে একটা বিষয়ে নিশ্চিতভাবে আমাদের সাদৃশ্য আছে যে, আমরা সবাই নিজ নিজ ঘরে বন্দী। কারন প্রায় বিশ্বজুড়ে Covid-19 এর প্রভাবে লকডাউন চলছে। তো আসুন বন্দীদশায় আমরা সক্রিয়ভাবে Self Branding শুরু করি।
ব্যাপার হলো- বিশ্ব জুড়ে নোবেল করোনা ভাইরাস ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে, যেটা কিনা এক প্রকার ছোঁয়াচে। অর্থাৎ মানুষের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে এই অদৃশ্য অতি-আনুবীক্ষণিক ভাইরাসটি ; একজনের আক্রন্ত শরীর থেকে অন্য সুস্থ্য শরীরে। যেটাকে এই মূহুর্তে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বিশ্ব জুড়ে মহামারি আখ্যায়িত করেছে।
এখানে করোনা নিয়ে আর না বলি; ইতিমধ্যে আপনারা সবাই Covid-19 এর খুটিনাটি জ্ঞান পত্রপত্রিকা, ইন্টারনেট ঘেটে অথবা নিউজ চ্যানেল গুলোর মাধ্যমে জানতে পেরেছেন। মোদ্দা কথা হলো, নোবেল করোনা ভাইরাসের প্রভাব বিস্তার রোধে অধিকাংশ দেশের সরকার নিজ নিজ দেশে জাতীয় ছুটি ঘোষনা করেছেন এবং জরুরী সেবা ব্যতীত সকল প্রকার পাবলিক ট্রান্সপোর্ট, লোক-সমাগম, দোকানপাট বন্ধ ঘোষনা করেছেন। এজন্য আপনি, আমি এবং আমরা সবাই প্রায় ৮০% লোক ঘরে বন্দি জীবন কাটাচ্ছি।
মহামারির এই বন্দি দশায় আমরা অনেকেই ঘরে বসে টিভি সিরিয়াল দেখছি, কেউ বই পড়ছি, কেউ পরিবারের সাথে ইনডোর গেমে ব্যস্ত, আবার কেউবা ছোট্ট ব্যালকুনিতে বাগান করা নিয়ে ব্যস্ত আছি। বন্দি দশায় এভাবে আমরা কোন না কোন ভাবে কিছু একটা করেই চলেছি নিরন্তন।এবং দিন শেষে তিক্ত বিরক্ত হয়ে মেজাজ হারিয়ে চলেছি। নিজেকে বদ্ধ মাতাল ভাবতে শুরু করেছি। অন্যদিকে ঘুম-প্রেমিরা নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে-ঘুমিয়ে পেটের মেদ বাড়িয়েই চলেছে। তো এই তিক্ত বিরক্তময় জীবনকে একটু আনন্দময় করে তুলতে একটি নতুন হোমওয়ার্ক আপনাদের দিতে এসেছি আমি।
Let's See the Topic Overview
হোমওয়ার্ক: ছবির মাধ্যমে অনলাইনে নিজের ব্রান্ড পরিচিতি (Self Branding) করা
সার্চ ইঞ্জিন সম্পর্কে জেনে নিই
আপনারা যারা ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত বা বিভিন্নভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে চলেছি তারা সকলেই হয়তো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের সাথে পরিচিত। বহুল পরিচিত সার্চ ইঞ্জিন গুলো হলো- গুগল, ইয়াহু, বিং, বাইদু এবং ইয়ানডেক্স এছাড়া আরও অনেকগুলো আছে, যেগুলো ব্যপকভাবে পরিচিত নয়। তবে এদের মধ্যে গুগলই সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং বহুল ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন।
ইং (মার্চ,২০১৯ থেকে মার্চ ২০২০)- এর মধ্যে এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে প্রায় ৯১.৯৮% অনুসন্ধান এবং সেকেন্ডে প্রায় ৬৩০০০ অনুসন্ধান গুগলে হয়ে থাকে। তাহলে জোর দিয়ে বলাই্ যায়- সার্চ ইঞ্জিনের জগতে এই মূহুর্তে গুগলই একমাত্র অপ্রতিদ্বন্দি প্রতিষ্ঠান। আর এই হোমওয়ার্কে আমি আপনাদের যে টার্গেট দিবো তা হলো গুগল সার্চ ইঞ্জিনে নিজের নাম ও ছবিকে ব্রান্ডে পরিনত (Self Branding) করা; অর্থাৎ নিজের নাম বা ব্রান্ড নাম লিখে গুগলে অনুসন্ধান করলে, অনুসন্ধান রেজাল্টে নিজের ছবি প্রদর্শন করবে।
গুগল অনুসন্ধানে যেভাবে রেজাল্ট প্রদর্শন করে
সাধারনত কোন কী-ওয়ার্ড বা কোয়েরি (Query) লিখে গুগলে সার্চ/অনুসন্ধান করলে গুগল মূলত তিন ধরনের রেজাল্ট প্রদর্শন করে।
- ইমেজ/ছবি
- ভিডিও
- ওয়েব রেজাল্ট
উদাহরন স্বরূপ গুগলের অনুসন্ধান বক্সে একটি কী-ওয়ার্ড (Sajib Roy) লিখে অনুসন্ধান করি এবং নিন্মের চিত্রটি প্রদর্শিত হয়, যেটাকে Google Search Result Preview বলে। চিত্রে আমাদের কাঙ্খিত রেজাল্ট ত্রয়কে লাল মার্ক করে দেওয়া হলো।
তো আজ আমরা শুধু ইমেজ অংশটি নিয়ে আলোচনা করবো; অর্থাৎ গুগল সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আমাদের ছবি/ইমেজ গুলো এমনভাবে প্রস্তুত বা অপটিমাইজ করবো যেন গুগলে আমাদের নাম লিখে সার্চ/অনুসন্ধান করলে ইমেজ-রেজাল্ট পেজে আমাদেরই ছবি/ইমেজ প্রদর্শিত হয়। মোট কথা ছবি/ইমেজ দিয়ে গুগল সার্চ ইঞ্জিনের কাছে নিজেকে পরিচিত করা; যেটাকে ছবি দিয়ে সেল্ফ ব্রান্ডিং (Self Branding) করা বলা হয়।
সেল্ফ ব্রান্ডিং (Self Branding)-এর জন্য করনীয়
ছবি দিয়ে সেল্ফ ব্রান্ডিং করার সবচেয়ে সহজ ও ফ্রি ব্যবস্থা গুলোর মধ্যে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা হয়। এছাড়া নিজের নামে একটি কাস্টম ডোমেইন কিনে ওয়েবসাইট তৈরীর মাধ্যমেও কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব; কিন্তু সেটা অবশ্যই ব্যয়বহুল ব্যপার এবং সেক্ষেত্রে যথেষ্ঠ পরিমানে Web Design, Web Development & SEO (Search Engine Optimization) জ্ঞান থাকা জরুরী। তাই ফ্রি ব্যবস্থাপনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সেল্ফ ব্রান্ডিং করার ক্ষেত্রে করনীয় ধাপ গুলো:
প্রথম ধাপ:
সেল্ফ ব্রান্ডিং এর প্রথম ধাপে কয়েকটি শক্তিশালি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট করতে হবে। এমন কয়েকটি শক্তিশালি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেগুলো গুগল র্যাঙ্কিং (Ranking) (বিশেষ করে ছবি/ইমেজ)-এর ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখে, সেগুলো হলো:
- Facebook Page
- YouTube
- Quora
- Digitalpoint
- About.me
- Flickr
- SlideShare
দ্বিতীয় ধাপ:
কোন ব্যক্তির প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের জন্য প্রোফাইল নাম, ইউজার নাম অথবা আলাদা কোন ব্রান্ড নাম যদি থাকে তবে তা সবগুলোর জন্য একই হতে হবে। ধরুন আপনার নাম সজীব রায় (Sajib Roy); তো আপনি এই নামটি ব্রান্ড বিবেচনা করুন, এবং প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল নাম ও ইউজার নামে এই নামটি বাছাই করুন। অথবা আপনার কোন ব্রান্ড নাম (যেমন: ABC) যদি থাকে তবে প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল নাম ও ইউজার নামে সেটাকে বাছাই করুন। নিন্মের চিত্রে একই ব্যক্তির বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট প্রোফাইল নাম (লাল মার্ক করা প্রোফাইল নাম) ব্যবহার করা দেখানো হলো ।
তৃতীয় ধাপ:
প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের URL/Permalink একই রাখার চেষ্টা করতে হবে। এবং URL/Permalink-এ প্রোফাইল নাম যুক্ত রাখার চেষ্টা করা আবশ্যক। যদি প্রোফাইল নাম হয় সজীব রায় (Sajib Roy); তবে তার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের যথার্থ URL/Permalink হবে-
Tumblr: https://www.tumblr.com/blog/sajibroy
About.me: https://about.me/sajibroy
চতুর্থ ধাপ:
প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের যাবতীয় রিকুয়্যারমেন্ট (যেমন: About, Bio, Date of Birth etc)সঠিক ভাবে পূরন করতে হবে। ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টগুলোতে দেওয়া তথ্যের সামঞ্জস্যতা অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।
পঞ্চম ধাপ:
প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের জন্য আলাদা আলাদা নিজের প্রোফাইল ইমেজ/ছবি এবং কাভার ইমেজ/ছবি ব্যবহার করতে হবে। তবে এখানে ইমেজ/ছবি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কীকরন বিধি বিধান মেনে চলতে হবে, তা না হলে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছানো সম্ভব নয়। তাই বিশেষ ভাবে প্রত্যেক অ্যাকাউন্টের জন্য ইমেজ/ছবি অপটিমাইজ করা খুবই জরুরী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ক্ষেত্রে ইমেজ অপটিমাইজেশন প্রক্রিয়া:
১. বিশেষাজ্ঞদের মতে (Image Ranking) ইমেজ র্যাঙ্কিং-এর ক্ষেত্রে সর্বাধিক (JPG) ফরম্যাটের ইমেজ ব্যবহার করাই উত্তম। তাই ইমেজ/ছবি গুলোকে JPG ফরম্যাটের রাখার চেষ্টা করা উচিত।
২. ইমেজ গুলোকে ব্রান্ড নাম দিয়ে রিনেইম (Rename) করতে হবে। নামের ভিতরে একাধিক শব্দ থাকলে তা হাইফেন (-) চিহ্ন দিয়ে পৃথক করতে হবে।
যেমন: Sajib-Roy (Best Rename) ;Sajib Roy (Bad Rename)
৩. ইমেজ গুলোর ডিটেইল (Detail) অপশনে গিয়ে সম্ভাব্য সকল তথ্য পূরন করতে হবে। এখানেও নিজের ব্রান্ড নাম ব্যবহার করতে হবে। নিন্মে প্রদর্শিত চিত্রের ডিটেইল অপশন-এ বিশেষ করে Title, Subject, Tags এবং সম্ভব হলে Comment অপশনটিও সঠিক তথ্য দিয়ে পূরন করতে হবে।
৪. প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের প্রোফাইল ইমেজ ও কাভার ইমেজ-এর পরিমাপ (দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও সাইজ) ইন্টারনেট থেকে তথ্য নিয়ে সঠিক ভাবে প্রস্তুত করতে হবে। এক্ষেত্রে ইমেজ ইডিটের জন্য সহজে Microsoft Paint বা Adobe Photoshop সফটওয়ার ব্যবহার করা যেতে পারে।
যেমন: ইউটিউবের ক্ষেত্রে প্রোফাইল ইমেজ (channel icon)সাইজ: ৮০০ x ৮০০ পিক্সেল কাভার ইমেজ (channel art) সাইজ: ২৫৬০ x ১৪৪০ পিক্সেল এবং ৬ মেগাবাইট ভিডিও থাম্বনিল ইমেজ সাইজ: ১২৮০ x ৭২০ পিক্সেল
এই সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্টের জন্য বাছাইকৃত ইমেজ/ছবি আপলোড করতে হবে। প্রত্যেকটি অ্যাকাউন্ট সক্রিয় রাখার জন্য মাঝে মাঝে বিভিন্ন পোষ্ট এবং ইমেজ (অবশ্যই অপটিমাইজ) শেয়ার করতে হবে। শেয়ারকৃত ইমেজও র্যাঙ্ক (Rank) করে থাকে।
একটি সুনির্দিষ্ট সময় পর গুগলে এগুলো ইনডেক্স হতে থাকে। এবং গুগল তার পছন্দমত (অবশ্যই গুগলের র্যঙ্কিং ফ্যাক্টরগুলো মেনে) ছবি গুলো তার ইমেজ রেজাল্ট পেজে র্যাঙ্ক (Rank) দিয়ে থাকে। এভাবে আমরা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গুলো ব্যবহার করে সেল্ফ ব্রান্ডিং (Self Branding) করতে পারি।
উদাহরন স্বরূপ, অমি যদি আমার নিজের নাম Sajib Roy (SEO specialist in Bangladesh) লিখে গুগলে অনুসন্ধান করি, তাহলে ইমেজ রেজাল্টের প্রথম পেজের প্রথম সারিতে আমার ওয়েবসাইট থেকে দুটি ও ফেসবুক পেজ থেকে একটি ছবি প্রদর্শন করে। অর্থাৎ গুগল-এর ইমেজ রেজাল্টের প্রথম পেজের প্রথম সারিতে আমার তিনটি ইমেজ (Rank) র্যাঙ্ক (লাল মার্ক করা) করেছে।
Keep Learning With Sajib Roy
It was great to see that. I am very glady for your work.I think you are so much rare talented.
Good job bro.