বন্ধুরা, চলো On Page SEO Optimization এর খুঁটিনাটি বিষয় গুলো শিখি।
আজকের অনুচ্ছেদটি যদি একটি গল্পের মাধ্যমে শুরু করি, তবে যেটা হতে পারে তা হলো – মনে করুন, আপনি ছাত্র জীবনে অথবা অবসর জীবনে আপনার খুবই পছন্দের একটি বিষয়বস্তু (Niche) নিয়ে অনলাইনে লেখালেখি করতে চাইছেন অথবা কোন প্রোডাক্ট বিক্রি করতে চাইছেন। ধরে নিলাম, লেখালেখিই করবেন; তো আপনি রীতিমত ডোমেইন-হোস্টিং ক্রয় করলেন এবং একজন প্রফেশনাল ডেভেলপার – এর সহায়তায় একটি মানসম্মত ওয়েবসাইট প্রস্তুত করে লেখালেখি শুরু করলেন।
কিন্তু যথেষ্ঠ প্রাসঙ্গিক এবং জ্ঞানগর্ভ বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা সত্ত্বেও আপনার সাইটটি Google SERPs – এ র্যাঙ্ক করছে না। তো আপনি রীতিমত ভেঙে পড়লেন এবং পাশাপাশি Google – এর র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর নিয়ে রিসার্চ শুরু করলেন এবং জানতে পারলেন একজন SEO Specialist এর সহায়তায় একমাত্র SEO (Search Engine Optimization) করার মাধ্যমেই কোন সাইটকে Google SERPs – এ র্যাঙ্ক করা সম্ভব।
এখন আপনি ভাবছেন সম্পূর্ন Organic প্রক্রিয়ায় আপনার সাইটটি অপটিমাইজ করবেন। এজন্য বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য SEO Expert জনাব এম.ডি নওশাদ স্যারের সহায়তায় On-Page SEO এবং Off-Page SEO সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করলেন। তো বন্ধুরা আসুন, অনুচ্ছেদটিতে জনাব এম.ডি নওশাদ স্যারের মতামতের উপর ভিত্তি করে On-Page SEO Optimization – এর প্রক্রিয়াগুলো যাচাই করি।
মনে করুন A- একজন ব্যক্তি এবং তার একটি ফ্যাশন শপ আছে। তো কোন ওয়েবসাইট – এর On-Page – এর ধারনা যদি এই ফ্যাশন শপের সাথে তুলনা করি তবে সেটা হবে- ফ্যাশন শপের ভিতরের সমস্ত পন্য সুন্দর ভাবে সাজিয়ে রাখা যেন ক্রেতাগনের স্বাচ্ছন্দ অনুভূত হয় এবং অবশ্যই অত্র এলাকার মানুষের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ পন্য মজুদ করা। অর্থাৎ আপনার সাইটের On-Page Optimization বলতে বোঝায় – আপনার টার্গেটেড ভিজিটরের সাথে সামঞ্জস্য রেখে তাদের চাহিদা মত বিষয়বস্তু প্রস্তুত করা এবং গুগল এর র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টরগুলো মেনে কন্টেইন আপডেট করা; যেন গুগলের ক্রলার এবং ভিজিটর উভয়েই সাইটে এসে স্বাচ্ছন্দ অনুভব করে।
এবার আসুন Op-Page SEO Optimization এর ট্যাকনিক্যাল ইস্যুগুলো পর্যায়ক্রমে পর্যালোচনা করি:
Let's See the Topic Overview
অনপেজ এসইও (On Page SEO) কি?
“অনপেজ এসইও হলো একটি সুনির্দিষ্ট ওয়েবসাইটের যাবতীয় অভ্যন্তরীন কর্মশালা; যে প্রক্রীয়া গুলো সঠিক ভাবে সম্পন্ন হলে ওয়েবসাইটটি সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে (SERPs) সহজে র্যাঙ্কিং পায়।”
অনপেজ এসইও তে গুগল এর গাইডলাইন অনুসারে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীন বিষয়বস্তু সমূহ সর্বোচ্চ ইউজার ফ্রেন্ডলী বা ইউজারের সুবিধার্তে প্রস্তুত করা হয়। অনপেজ এসইও এর এই অর্গানিক অংশটি র্যঙ্কিং – এর জন্য এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ যে, যদি এটাকে সঠিক ভাবে সম্পন্ন করা না হয়, তবে সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে ওয়েবসাইটটি খুজেই পাওয়া যায় না।
অনপেজ এসইও (On Page SEO) কেন গুরুত্বপূর্ণ?
অনুমান করা হয়, র্যাঙ্কিং এর জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিনে প্রায় ২০০-২৫০ টি ভিন্ন ভিন্ন র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর আছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টরদুটো হলো ওয়েবসাইটের অনপেজ এসইও এবং অফপেজ এসইও।
এই ফ্যাক্টরদ্বয়ের মধ্যে অনপেজ এসইও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যাবশকীয় বিবেচিত হয়। জনাব এম.ডি নওশাদ স্যারের মতে গুগল SERP – এ র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে অনপেজ এসইও এর গুরুত্ব প্রায় ৬৫-৭০ শতাংশ এবং অফপেজ এসইও এর গুরুত্ব ৩০-৩৫ শতাংশ। বিভিন্ন মার্কেটপ্লেস গুলো বিশ্লেষন করলে সমীক্ষায় পাওয়া যাবে, অনপেজের কাজের চাহিদা তুলনামূলক বেশি।
অনপেজ এসইও (On Page SEO) এর গুরুত্বপূর্ণ ট্যাকনিক সমূহ
অনপেজ এসইও এর ট্যাকনিক সমূহ আলোচনা পর্বের প্রাথমিক ধাপে আমরা গুগলের সার্চ রেজাল্ট পেজটি একবার পর্যালোচনা করবো। সাধারনত গুগল এর সার্চ বক্সে যে কোন কি-ওয়ার্ড অথবা কোয়ারি লিখে সার্চ করলে গুগল সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে ১০টি রেজাল্ট প্রদর্শন করে। এদের প্রত্যেকটি রেজাল্টকে Snippet Preview বলা হয়। নিন্মে একটি Snippet Preview চিত্র দেখানো হলো:
উপরের চিত্রে SERP – এর – Snippet Preview থেকে আমরা তিনটি অংশ দেখতে পাই
- URL
- Title
- Meta Description
সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই জোর দিয়ে বলা যায়, র্যাঙ্কিং- এর ক্ষেত্রে গুগল অবশ্যই এই তিনটি অংশকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। তো এখন আমরা জনাব এম.ডি নওশাদ স্যারের মতামতের উপর ভিত্তি করে Snippet Preview এর তিনটি অংশকে কিভাবে গুগল এবং ইউজার উভয়েরই ফ্রেন্ডলি করা যায় তা পর্যালোচনা করবো:
ইউআরএল স্ট্রাকচার ও অপটিমাইজেশন (URL Optimization):
অনেকেই URL স্ট্রাকচার ও অপটিমাইজেশন এই অংশটিকে ”ট্যাকনিক্যাল এসইও” এর কাজ হিসাবে মনে করেন; কিন্তু এটা অনপেজ এসইও এর সাথেও যথেষ্ঠ সামঞ্জস্যপূর্ন। গুগল র্যাঙ্কিং এর ক্ষেত্রে অধিকাংশ এসইও বিশেষজ্ঞ ইউআরএল এর স্ট্রাকচার এবং সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়মে এটাকে বিন্যস্ত বা অপটিমাইজ করাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করেন।
সাধারন URL কে এসইও ফ্রেন্ডলি করে প্রস্তুত করতে হলে যে যে নিয়ম অনুসরন করা উচিত তা হলো:
- অবশ্যই সংক্ষেপিত করতে হবে এবং ফরোয়ার্ড স্লাচ (/) ব্যবহার করে লম্বা করা যাবে না।
- চেষ্টা করতে হবে ২৫ ক্যারেক্টারের মধ্যে সীমিত রাখা।
- অবশ্যই টার্গেটেড কীওয়ার্ডকে এর ভিতরে স্থান দিতে হবে।
- ভিন্ন ভিন্ন শব্দের মাঝে ’-’ (হাইফেন) চিহ্ন ব্যবহার করতে হবে এবং কোন স্পেস ব্যবহার করা যাবে না।
- অবশ্যই বর্ণনামূলক হতে হবে; এবং অযাচিত শব্দ প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
- স্টপ ওয়ার্ড ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হবে।
টাইটেল অপটিমাইজেশন (Title Optimization):
গুগল ক্রলার এবং ভিজিটর উভয়ের জন্যই টাইটেলকে সুন্দরভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি করে অপটিমাইজ করা খুবই জরুরী। কারন অন্যান্য বিষয়গুলোর সাথে গুগল ক্রলার এই অংশটিকে ক্রল করে থাকে এবং অধিকাংশ ভিজিটর এটি দেখে আকৃষ্ট হয়। তো আসুন একটি যথার্থ এসইও ফ্রেন্ডলি টাইটেল নির্বাচন করতে করনীয় বিষয় সমূহ নিন্মে আলোচনা করি-
- প্রথমত এটি অবশ্যই ইউনিক হতে হবে এবং গুগল অথবা অন্য কোন সার্চ ইঞ্জিন থেকে কপি করা যাবে না। সার্চ ইঞ্জিনের এলগরিদম কপি করা টাইটেলকে কপিরাইট ক্লেইম হিসাবে চিহ্নিত করবে এবং কখনই র্যাঙ্কিং দিবে না। কপিরাইট ক্লেইম এর জন্য গুগল সাইটটিকে ব্যন করে দিতেও পারে।
- অবশ্যই টার্গেট কীওয়ার্ড যোগ করতে হবে; মূল কীওয়ার্ড টাইটেলের প্রথম অংশে এবং আনুষঙ্গিক ওয়ার্ড শেষে রাখতে হবে।
- সর্বদা সংক্ষেপিত রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং এটাকে ৭০ ক্যারেক্টারের ভিতরে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করতে হবে। কারন ৭০ ক্যারেক্টারের বেশি হলে রেজাল্ট পেজের (Snippet Preview) এ টাইটেলের শেষে (……) ডট চিহ্ন প্রদর্শন করবে যেটি গুগল মোটেই ভালোভাবে গ্রহন করে না।
যেমন মূল কীওয়ার্ড যদি হয় ”SEO Expert” তবে গ্রহনযোগ্য টাইটেল হবে – ” SEO Expert in Bangladesh”
- টাইটেলে যদি একের অধিক ফ্রেজ (Phrase) অথবা একের অধিক অর্থবোধক বাক্য তৈরি প্রয়োজন হয় তবে সেগুলোকে শুধুমাত্র (।) পাইপ বা (-) হাইফেন চিহ্ন দিয়ে পৃথক করা উত্তম। কখনই কমা, আন্ডারস্কোর, ড্যাস অথবা অন্য কোন যতি চিহ্ন ব্যবহার করা যাবে না।
যেমন: Making Best Baby Food | Happy Family Organic – ভালো টাইটেল Making Best Baby Food, Happy Family Organic – খারাপ টাইটেল
- ডোমেইন নাম যুক্ত করার দরকার নেই; তবে অবশ্যই বর্ননামূলক হতে হবে।
- অভ্যন্তরে গাণিতিক সংখ্যা এবং পাওয়ার ওয়ার্ড যোগ করা ভালো প্রাকটিস।
মেটা ডেস্ক্রিপশন অপটিমাইজেশন (Meta Description Optimization):
কোন ওয়েবপেজের এই অংশটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার একমাত্র স্থান; এখানে পেজের বিষয়বস্তুটি সংক্ষেপে তুলে ধরা হয়। সেপ্টেম্বর, ২০০৭– এ গুগল একটি ঘোষনার মাধ্যমে জানিয়ে দেয় যে, মেটা ডেস্ক্রিপশন র্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর নয়; তবুও এটা দেওয়া উচিত। কারন, ভিজিটর এখান থেকে সংক্ষেপে পেজটির সম্পর্কে ধারনা লাভ করে। তো আসুন, জেনে নিই একটি অর্থবহ Meta লিখতে কি কি নিয়ম অনুসরন করতে হবে-
- এটাকে অবশ্যই ১৫০ ক্যারেক্টারের ভিতরে রাখা উচিত; ১৫০ ক্যারেক্টারের বেশি হলে গুগল রেজাল্ট পেজে Description – এর পিছনে (…..) ডট চলে আসবে; যেটি গুগল মোটেই ভালোভাবে গ্রহন করে না।
- লেখার শুরুতে প্রধান কীওয়ার্ডটি একবার ব্যবহার করা উচিত এবং এমন অর্থবহভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন এর মাধ্যমে ভিজিটর সংক্ষেপে পেজটির সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা লাভ করতে পরে।
- লেখাটি সম্পূর্ণ ইউনিক এবং পেজের বিষয়বস্তুর সাথে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে; যেন সম্পূর্ণ পেজের বিষয়বস্তুর প্রতিফলন এখানে ঘটে।
নোট: কোন কারনে যদি Meta Description না দেওয়া হয়; তবে গুগল নিজেই মূল কন্টেন্ট থেকে প্রথম প্যারা থেকে ১৫০ ক্যারেক্টার এর Description জেনারেট করে নেয়। এবং অনেক সময় এটা দেওয়ার পরও গুগল সেটাকে রেজাল্ট পেজে প্রদর্শন করে না, নিজেই কন্টেন্ট থেকে জেনারেট করে নেয়; করন গুগল মনে করে ভিজিটরের জন্য এটাই সর্বোত্তম।
ওয়েব পেজ বডি:
একটি সাইটের পেজ বডি কয়েকটি উপাদান নিয়ে গঠিত হয় এবং বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই উপাদান গুলোকে অপটিমাইজ করে গুগল সার্চ রেজাল্ট পেজে র্যাঙ্ক করতে বিশেষ ভাবে চেষ্টা করা হয়। পেজ বডিকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় –
কন্টেন্ট অপটিমাইজেশন (Content Optimization):
কন্টেন্ট একটি সাইটের প্রাণ কল্পনা করা হয়। একটি সাইটের গঠনমূলক বিস্তারিত কন্টেন্ট অধ্যায়নই একজন ভিজিটরের চূড়ান্ত উদ্দেশ্য হয়ে থাকে; তাই গুগল সার্চ রেজাল্ট পেজে র্যাঙ্ক পেতে এই অংশকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। কিন্তু শুধু গঠনমূলক কন্টেন্ট হলেই চলবে না; গুগলের নিয়ম অনুসারে কিছু সুনিদিষ্ট পরিকাঠামোর ভিত্তিতে পরিমার্জিত করে উপস্থাপন করতে হবে যেন সেটি সহজে ভিজিটর এবং ক্রলার স্বাচ্ছন্দবোধ করে। তো আসুন পরিমার্জিত কন্টেন্ট প্রস্তুত করার নিয়মগুলো আলোচনা করি –
- সম্পূণ ইউনিক হতে হবে; কোনভাবেই কপিরাইট কন্টেন্ট ব্যবহার করা যাবে না।
- কন্টেন্টটি অবশ্যই বর্ননামূলক, গঠনমূলক এবং সহজবোধ্য হতে হবে; যেন ভিজিটর সহজেই তার কাঙ্খিত তথ্য খুজে পায়।
- (Keyword Density) কীওয়ার্ড ঘনত্বের একটি সুনির্দিষ্ট মাত্রা অনুসরন করে কন্টেন্ট প্রস্তুত করতে হবে। যদিও এই মাত্রার কোন সুনির্দিষ্ট পরিমাপ নেই, তবে অধিকাংশ এসইও বিশেষাজ্ঞরা বলে থাকেন (১ – ৫)% অনুপাতে এটাকে প্রয়োগ করা ভালো ফলদায়ক। জনাব এম.ডি নওশাদ স্যারের মতে এটা (.১ – .৩)% বজায় রাখা অধিকতর ভালো ফলদায়ক।
নোট: কীওয়ার্ডকে বারবার ব্যবহার করলে গুগলের ভাষায় সেটাকে (Keyword Stuffing) কীওয়ার্ড স্ট্যাফিং বলে। গুগলের কাছে কীওয়ার্ড স্ট্যাফিং এক প্রকার ক্রাইম বলে বিবেচিত হয়; কারন গুগল অ্যালগরিদম মনে করে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে একটি কীওয়ার্ডকে বারবার ব্যবহার করে ওই কীওয়ার্ডের জন্য পেজ র্যাঙ্কিং করাতে চাইছে। তাই কীওয়ার্ডেও ঘনত্ব বজায় রাখতে হবে যেন কীওয়ার্ড স্ট্যাফিংও না ঘটে।
- কন্টেন্ট – এ কীওয়ার্ড প্রমিনেন্স (Keyword Prominence) সুনির্দিষ্টভাবে বিন্যাস করতে হবে। অর্থাৎ সমস্ত পেজের গুরুত্বপূর্ণস্থানে টার্গেট কীওয়ার্ড স্থাপন করতে হবে। যেমন টাইটেল, মেটা-ডেসক্রিপশন ইত্যাদি স্থানে।
- কোনভাবেই কীওয়ার্ড প্রক্সিমিটি (Keyword Proximity) করা যাবে না। এর অর্থ প্রধান কীওয়ার্ডকে ভেঙে ভেঙে বার বার ব্যবহার করা।
যেমন- How to play football – প্রধান কীওয়ার্ড Play football – প্রক্সিমিটি কীওয়ার্ড কীওয়ার্ড প্রক্সিমিটি করা উচিত নয়; কারন প্রক্সিমিটি বাড়লে কীওয়ার্ড ঘনত্ব বেড়ে যায়।
- কন্টেন্ট এর টেকস্ট মডিফাই করা উচিত নয়। অর্থাৎ কন্টেন্ট – এর ভিতরে বোল্ড বা ইটালিক হরফে লিখে ভিজিটরের দৃষ্টি আকর্ষন করা গুগল ফ্রেন্ডলি নয়। তবে এটা করা যাবে না এমন নয়; গুগল এর জন্য অতিরিক্ত কোন র্যাঙ্কিং মূল্য দেয় না।
- কীওয়ার্ড – এর ঘনত্ব বজায় রাখার জন্য (LSI) Latent Semantic Indexing Keyword ব্যবহার করা যেতে পারে। LSI এর অর্থ সমার্থক শব্দ ব্যবহার করা।
যেমন: Ladies bag – প্রধান KW ;Women Bag – LSI KW
হেডিং ট্যাগ অপটিমাইজেশন (Heading – Tag Optimization):
On Page SEO হেডিং ট্যাগ অপটিমাইজ খুবই অত্যাবশ্যকীয়। সার্চ র্যাঙ্কিং – এর জন্য প্রতিটি পেজে সুনির্দিষ্টভাবে হেডিং ট্যাগ বিন্যাস্ত করা খুবই জরুরি। আকারের বিন্যাসে হেডিং ট্যাগ যথাক্রমে বড় (H1) থেকে ছোট (H2) অবধি হয়ে থাকে; অর্থাৎ H1>H2>H3>H4>H5>H6. এখানে H1 ট্যাগকে গুগল ক্রলারের জন্য অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয় এবং পর্যায়ক্রমে নিচের দিকে কম গুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করা হয়। তো আসুন হেডিং ট্যাগ ব্যাবহারের নিয়মাবলি আলোচনা করি –
- গুরুত্বের বিবেচনায় যেহেতু H1 ট্যাগ সর্বোচ্চ, তাই কোন পেজের টাইটেলে এটাকে ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অবশ্যই একটি পেজে সর্বোচ্চ এক বার H1 ট্যাগ ব্যবহার করা উত্তম।
- H1 ট্যাগ ব্যহারের পর পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ট্যাগ গুলো ব্যবহার করা হয়। পেজ ডেসক্রিপশনে সর্বপ্রথম H2 ট্যাগ ব্যবহার করা হয়; এবং পর্যায়ক্রমে H3>H4>H5>H6 ট্যাগ ব্যবহার করা হয়। শুধুমাত্র H1 ট্যাগ ব্যতীত অন্য সকল ট্যাগকে একের অধিক বার ব্যবহার করা যায়।
একটি উদাহরন দিয়ে আমরা H – Tag সংবলিত বিষয়টি বিবেচনা করতে পারি –
উপরের শ্রেণীবিন্যাস থেকে আমরা দেখতে পাই যে, কোন বিষয়বস্তু যদি অন্য বিষয়বস্তুর.অন্তরভুক্ত হয় তাহলে ঐ ট্যাগের তারতম্য ঘটে এবং সর্বদা অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো ঐ ট্যাগের নিন্মমানে সজ্জিত হয়।
এ্যাঙ্কর টেকস্ট অপটিমাইজেশন (Anchor Text Optimization):
এ্যাঙ্কর টেকস্ট বলতে বোঝায় কোন পেজের সাথে অন্য পেজ বা অন্য কন্টেন্ট এর URL/Permalink যুক্ত বা লিঙ্কিং করা, যেন সেটি ক্লিকঅ্যাবল হয় এবং ক্লিক করলে এক পেজ থেকে অন্য কাঙ্খিত পেজে বা লোকেশনে নিয়ে যায়। এটাকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়-
ইন্টারনাল এ্যাঙ্কর টেকস্ট (Internal Anchor Text):
যখন একই সাইটের মধ্যকার ভিন্ন পেজের সাথে অথবা কন্টেন্টের সাথে অ্যাঙ্কর করা হয় তখন তাকে ইন্টারনাল এ্যাঙ্কর টেকস্ট বল হয়।
এক্সারনাল এ্যাঙ্কর টেকস্ট (External Anchor Text):
যখন একই সাইটকে সম্পূর্ণরূপে ভিন্ন কোন সাইটের সাথে অ্যাঙ্কর বা লিঙ্কিং করা হয় তখন সেটাকে এক্সারনাল এ্যাঙ্কর টেকস্ট বলা হয়।
গুগল সার্চ পেজে র্যাঙ্ক পেতে এ্যাঙ্কর টেকস্ট খুবই গুরুত্বপূর্ণ; ভালো এ্যাঙ্কর লিঙ্ক করতে পারলে গুগল ওই সাইটটি একটি High Authority সাইট বিবেচনা করে। তবে এ্যাঙ্কর করতে হলে আমাদের কিছু কিছু খেয়াল করা জরুরী।
তো আসুন একটি ভালো এ্যাঙ্কর গঠন করতে আমাদের যা যা করণীয় তা আলোচনা করি
- লিঙ্ক-এর জন্য জেনেরিক টেকস্ট ব্যবহার করা যাবে না; যেমন Link, Page, Click ইত্যাদি।
- অবশ্যই ইন্টারনাল ও এক্সারনাল লিঙ্কের আনুপাতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
- পেজের URL/Permalink কে এ্যাঙ্কর হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না।
- লিঙ্ক – এর ক্ষেত্রে অবশ্যই পেজ দুটি অথবা কন্টেন্ট দুটি পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত এবং অর্থবহ হতে হবে।
- কোন ভুল বা অর্থহীন URL দিয়ে এ্যাঙ্কর করা যাবে না।
মিডিয়া অপটিমাইজেশন (Media Optimization) :
গুগল SERPs র্যাঙ্কিং – এর জন্য মিডিয়া অপটিমাইজেশন খুবই অত্যাবশকীয়। গুগলের নিয়ম অনুসারে বিভিন্ন প্রকার মিডিয়া কন্টেন্ট গুলো ( ভিডিও, অডিও, ইমেজ, ডকুমেন্ট ফাইল) অপটিমাইজ করাটা অনপেজের অন্তর্ভুক্ত।
নোট: সাধারণত গুগল SERPs -এ ৩ ধরনের রেজাল্ট প্রদর্শিত হয়।
- web
- image &
- video
উপরের SERP -প্রিভিউ থেকে দেখা যায়, গুগল ইমেজ ও ভিডিওগুলো সুনির্দিষ্ট কী-ওয়ার্ডের জন্য আলাদা আলাদা বিভাগে র্যাঙ্কিং করিয়ে থাকে। সুতরাং ভিডিও ও ইমেজ ক্যাটাগরিতেও আমাদের কাঙ্ক্ষিত মিডিয়া গুলো র্যাঙ্ক করানোর চেষ্টা করতে হবে এবং অবশ্যই আমাদের ওয়েব পেইজটি ওয়েব ক্যাটাগরিতে র্যাঙ্ক করানোর attribute গুলো অপটিমাইজড করতে হবে।
তো আসুন আমরা বিভিন্ন প্রকার মিডিয়া কন্টেন্ট গুগল ফ্রেন্ডলি ভাবে অপটিমাইজেশন করার প্রক্রিয়া আলোচনা করি। ভিডিও ও ইমেজ অপটিমাইজিং; কারণ Google এই দুটোকে বিশেষ মূল্য দেয়।
ইমেজ অপটিমাইজিং
কোন ছবি বা ইমেজকে গুগল আলাদা ক্যাটাগরিতে র্যাঙ্কিং করিয়ে থাকে। তাই ইমেজ ক্যাটাগরিতে ইমেজ রাঙ্কিং করাতে হলে ইমেজ অপটিমাইজেশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারানত পারসনাল ব্র্যান্ডিং বা কোন কোম্পানির ব্র্যান্ডিং বা প্রচারনার জন্য ইমেজ রাঙ্ক করা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ইমেজ অপটিমাইজেশন (Image Optimization) প্রক্রিয়াঃ
- সর্বপ্রথমে এমন ধরনের image(ছবি) বাছাই করতে হবে যেটি আপনার টেক্সট কনটেন্টের সাথে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখবে। তবে অবশ্যই প্রাসঙ্গিক ও গঠনমূলক ইমেজ হতে হবে।
- অবশ্যই ইমেজ গুলোর সাইজ 100-150kb -এর মধ্যে রাখতে হবে।তাহলে সাইটের লোডিং স্পীডের উপর কোন প্রভাব পড়বে না। সাধারণত ইমেজ সাইট বড় হলে সাইট লোডিং স্পীড কমে যায় এবং ranking -এর কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানোর সম্ভাবনা কমে যায়।
- সাইজ অপটিমাইজেশনের পর ইমেজ গুলোকে ফোকাস কীওয়ার্ড দিয়ে রি-নেইম করে নিতে হবে। একাধিক শব্দযুক্ত নাম হলে অবশ্যই শব্দগুলোর অভ্যন্তরে হাইফেন(-) চিহ্ন দিয়ে যুক্ত রাখতে হবে। নামের ভিতরে কোনপ্রকার space(ফাঁকা) অগ্রহণযোগ্য।
উদাহরন: SEO-Expert (অপটিমাইজ রিনেইম); SEO Expect (অপটিমাইজ নয়)
- ইমেজ ফরমেটের ক্ষেত্রে অবশ্যই Jpeg, bmp, png, gif ইত্যাদি ব্যবহার করা উত্তম।
- ইমেজ আপলোড করার পর অবশ্যই Alt-Text যুক্ত করতে হবে। এটি সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া এবং Alt Text -এ ফোকাস কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
- অবশ্যই ইমেজের ডিটেইলস সেকশন থেকে টাইটেল, ক্যাটাগরি,রেটিং,ট্যাগ,কমেন্ট, অথোর পূরণ করতে হবে। তবে এখানে কীওয়ার্ডের ব্যবহার উচিত(আবশ্যক নয়)।
ভিডিও অপটিমাইজিং:
স্বাভাবিক ভাবে ব্লগ সাইট অথবা ছোট/মাঝারি আকারের বিজনেস সাইটের ক্ষেত্রে খুব বেশি ভিডিও ব্যবহৃত হয়না। তবুও আমাদের উচিত হবে ব্যবহৃত ভিডিও গুলোকেও SERP -এ ভিডিও ক্যাটাগরি rank করানো, আবার অপটিমাইজডহীন ভিডিও কনটেন্টযুক্ত কোন ওয়েব পেইজ rank করানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই অবশ্যই অপটিমাইজেশন জরুরী।
ভিডিও অপটিমাইজেশন (Video Optimization) প্রক্রিয়াঃ
- অবশ্যই বিভিন্ন টুলস্ ব্যবহার করে ভিডিও গুলোর সাইজ কমিয়ে আনতে হবে। বড় সাইজের ভিডিও সাইট স্পিড কমিয়ে দেয়। তবে হ্যাঁ, ভিডিও কোয়ালিটির মানদণ্ড রাখতে হবে,যেন ভিজিটর বিরক্ত না হয়।
- ইমেজ অপটিমাইজেশনের মতো ভিডিও এর রিনেইম এবং ডিটেইলস অপশন গুলো ফোকাস কীওয়ার্ড ব্যবহার করে অপ্টিমাইজড করতে হবে।
- বিভিন্নপ্রকার CDN ব্যবহার করা উত্তম উপায়। সেক্ষেত্রে সাইজের লোডিং স্পীডে কোন প্রভাব পড়বে না। CDN – Content Delivery Network
- বর্তমানে ওয়েব ব্রাউজার গুলো HTML5 ((MP৪, webM, ogg)) ভিডিও ফরম্যাট সার্পোট করে। তাই এই ফরম্যাটের ভিডিওগুলো অ্যাম্বেড করে ওয়েব পেইজে ব্যবহার করাও একটা উত্তম উপায়।
শেষ কথাঃ
অনুচ্ছেদের প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছিল 65-70% র্যাঙ্কিং সম্ভাবনা নির্ভর করে পেজের On Page SEO Optimization উপরে। তাই উপরের প্রক্রিয়া গুলো সম্পন্ন করা খুবই জরুরী। একইসাথে কিছু টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু আছে, যেগুলো অনেকবেশি র্যাঙ্কিং ভ্যালু বহন করে। তো এই সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর একটি ওয়েব পেইজ কে SERP -এর কাঙ্ক্ষিত স্থানে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
এবং 100% এস ই ও সম্পন্ন করতে অবশ্যইঅফ পেজে SEO করতে হবে। অফ পেজ SEO তে বিভিন্নভাবে ওয়েব পেজটির জন্য মার্কেটিং করা হয়।
সামগ্রিক এই কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন করার পর অবশ্যই Google একটি ওয়েব পেইজ কে সুনির্দিষ্ট সময় পর SERP -এ স্থান দিয়ে থাকে।
Keep Learning With Sajib Roy
শুরুর গল্পটা ভালো লেগেছে। এটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য! অন-পেজ অপ্টিমাইজেশন- এর খুঁটিনাটি শিখলাম।
Very Nice And Helpful Content. Thanks For This Content.!